উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন - লেনিনের তত্ত্বটি আলোচনা করো।

WhatsApp Channel Join Now

প্রশ্ন:- উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন – লেনিনের তত্ত্বটি আলোচনা করো।

উত্তর:- হবসন লেলিনের তথ্য:- ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ হবসনের মতে পশ্চিম দেশ গুলিতে ধর্ম বন্টনের বৈষম্যের ফলে পুঁজিপ্রতিদের হাতে যে মাত্র মূলধন জমে, তার লগ্নির ক্ষেত্রে অনুসন্ধানের জন্য নিজেদের দেশের সরকারকে সাম্রাজ্য বিস্তারের বাধ্য করে। অন্যদিকে রুশ কমিউনিস্ট নেতা লেলিন পুঁজিবাদকে সাম্রাজ্যবাদের বীজ বলে অভিহিত করেন। তার মতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য বিক্রয় এবং শিল্প উৎপাদনের জন্য সস্তায় কাঁচামাল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলি উপনিবেশ দখলের চেষ্টা চালায়। এই দুই তথ্য হবসন – লেলিনের তথ্য নামে পরিচিত।

সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসনের বক্তব্য:-

১) পুঁজির উদ্ভব:-

হবসন ‘Imperialism : A Study’. গ্রন্থে বলেছেন শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদিত উদ্বৃত্ত পণ্য প্রচুর পরিমাণে উদ্বৃত্ত পুঁজিগড়ে তোলে এই উদকৃত পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে মালিক শ্রেণী মুনাফা হার ঘরে তোলে। যখন নিজ নিজ দেশে বিনিয়োগ লক্ষমাত্রায় পৌঁছায় তখন অন্য দেশের বাজারে শিল্প দ্রব্য ও পুঁজি রপ্তানির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই নতুন বাজার হলো নতুন উপনিবেশ।

২) অভ্যন্তরীণ বাজারের ক্ষতি:–

শিল্প বিপ্লবের ফলে যে প্রচুর মুনাফা অর্জিত হয় তার কিছু অংশ কিছু ব্যক্তির হাতে চলে যায়। ফলে সমাজের বড় একটি অংশ যাদের হাতে কোন অতিরিক্ত পুজি ছিল না তাদের ক্রয় ক্ষমতা চলে যায় এবং অভ্যন্তরীণ বাজার গড়ে ওঠার সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়।

৩) পুঁজির বিকাশ:-

উজির বিকাশ ও গতিশীলতার ক্ষেত্রে উপনিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সস্তা কাঁচামাল সস্তা শ্রমিক এবং শিল্পদ্রব্য বিক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয়তা হীন বাজার তৈরি কারণে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।

সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে লেলিনের তথ্য:-

সাম্রাজ্যবাদ উজিদের চূড়ান্ত পর্যায় গ্রন্থে- লেলিন বিষয় ভাবে আলোচনা করেছেন । তিনি সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ প্রতিষ্ঠাতা সম্ভাব্য হিসেবে উজির গুরুত্ব তুলেছেন।

৪) পূজির উদ্ভব:-

লেলিন দেখিয়েছেন যে শিল্পের অগ্রগতির ইউরোপীয় দেশগুলি মুষ্টিমিও পুঁজিপতি হাতে বিপুল পরিমাণ পুজি সঞ্চিত হয় ওই পুঁজি ইউরোপের ভূখণ্ডের মধ্যে বিনিয়োগ করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করা সম্ভাবনা ছিল কম তাই এই পরিস্থিতিতে পুঁজিবাদী দেশগুলি ইউরোপের বাহিরে নতুন উপনিবেশের প্রসারে ঘটিয়ে সেখানে উদ্বৃত্ত পুঁজির বিনিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রসার ঘটে এবং সক্রিয় হয়ে ওঠে।

বাজার দখল ও কাঁচামাল সংগ্রহ:-

অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের শিল্প মালিকরা নিজ দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অন্যান্যকে বেশি পণ্য সামগ্রিক উৎপাদন করে।
প্রয়োজনে অতিরিক্ত এই পণ্য উৎপাদনের জন্য সস্তায় কাঁচামাল সংগ্রহ এবং সেই পণ্যকে বিক্রি করার জন্য প্রয়োজন ছিল উপনিবেশ লেনিনের মতে, এই উপনিবেশ কে সক্রিয়তা করতে পুঁজিপতি রাষ্ট্রপতি উপনিবেশ দখলের চেষ্টা চালায়।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা:-

উপনিবেশ দখল কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী অর্থাৎ পুঁজিবাদী অর্থনীতি হল জনমদাতা। যার সূত্রপাত হয় উপনিবেশ দখল কে কেন্দ্র করে।

শ্রমিক শ্রেণীর উদ্ভব:-

ইউরোপের উন্নত দেশগুলিতে শ্রমিক শ্রেণীতে জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের দিকে পুঁজিপ্রতি শ্রেণীর নজর ছিল তারা এশিয়া ও আফ্রিকার ন্যূনতম দেশগুলিকে পুজিবিনিয়োগ এবং সেখানকার শ্রমিক শ্রেণীর উপর সীমাহীন শোষণ চালায় এর ফলে যে প্রচুর পরিমাণ লাভ করে তার একটাই সামান্য অংশ দেশের শ্রমিকদের উৎকোচ ক্রয়ে বর্ষতিভূত করা। কারণ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলি লক্ষ্য ছিল এই অনুগত অভিজাত শ্রমিক শ্রেণীকে বিপ্লব থেকে বিরত রাখা।

মূল্যায়ন:-

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন ও লেলিনের তথ্য সম্পূর্ণ ত্রুটি মুক্ত নয়। বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে এই তথ্যের ভুল ধরা পড়ে তার সত্ত্বেও এই তথ্যের গুরুত্ব বিস্ময়কর করা যায় না।